মন্তব্য প্রতিবেদন:……….
মে : নুরুল বশির
—————————-
১৯৭৪ সালে আমি ফেনী জেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী পাইলট কমপ্লেক্সে প্রাইমারী স্কুলে পড়তাম।আমাদের বাসা ছিল থানা পাড়ায়।মাঝে মাঝে মাস্টার পাড়া,উকিল পাড়ায় ঘুরতে যেতাম।কিন্তু আমি ও আমার সহপাঠীদের দারুন একটি নেশা ছিল।নেশাটি হলো- ফেনী কোর্টের সামনে বিশাল এক দিঘি ছিল। যে দিঘির চারিপাশে চ্যাইন্জার বাজিয়ে কুন্ডশ্বরী বড়ি, শিয়ালের তেল, ধনেশ পাখির তেল ইত্যাদি বিভিন্ন রোগ ব্যাধির ঔষধ বিক্রি করতো ক্যানভাসাররা। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য নানা রকম অঙ্গভঙ্গিতে নানা রকম কাব্যিক ভাষায় খুব মধুর মধুর কথা ও গল্প বলা হতো।আর এগুলো শোনার জন্যই আমরা স্কুল পালিয়ে দিঘির পাড়ে গিয়ে হাজির হতাম।মাঝে মাঝে সকাল সকাল যখন স্কুলে যেতাম তখন দেখতাম অনেক হিন্দু মুসলিম দিঘিত গোসল করে যাওয়ার সময় কার্টের সামনে এলে হিন্দুরা আদালত ভবনকে দু’হাত জড়ো করে সম্মানের সাথে নমস্কার করতো।মুসলিমরাও কোর্টকে সম্মান দেখাতো।তখন এসবের গভীরতা বুঝতাম না। আজ মাজবয়সী জীবনে এসে দেখি বিজ্ঞ আইনজীবীরা কোর্টে আসীন বিচারককে অশ্লিল গালিগালাজ করে! তুই তোকারি ভাষায় এজলাস থেকে বিচারককে নেমে যেতে বলে। আজ আমরা কতটা ডিজিটাল হয়েছি তা পরিমাপের কোন নিক্তি আমার কাছে নেই তবে এখন এটুকু জ্ঞানতো হয়েছে যে, আমরা একটি বর্বর সমাজের কলঙ্কিত অধ্যায় এখনো পেরিয়ে আসতে পারিনি।বিচারক এবং বিচার ব্যাবস্হার প্রতি কালো কোর্ট পরিহিতদের এই আচরণ পাকিস্তানি হানাদারও হয়তো কোনদিন সাহস পায়নি।আজ সময় এসেছে বিচার বিভাগের সম্মান এবং স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠায় এক আপোষহীন শক্ত অবস্থান নেওয়ার।কারো রক্ত চক্ষুকে তোয়াক্কা করে মাননীয় বিচারকবৃন্দ এসলাসে আসিন হন না।কারো ইচ্ছা অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে আদালত চলবে না। যে জেলায় বিচারকের কোর্ট বর্জনের হুমকি দেওয়া হবে সে জেলায় দেওয়ানী ফৌজদারি কোন আদালতেই বিচারকগণ বিচারাসনে উপবিষ্ট হবেন না।বিচারকের মাসিক বেতনতো ব্যাংক একাউন্টে জমা হবে।দেখা যাক কালো কোর্ট পরে বিচারিক কার্যক্রম ওনারাই চালাক।শুধু একটি বিষয় অনুধাবন করতে অনুরোধ -কালো গাউন বিজ্ঞ আইনজীবীরাও পড়েন এবং মাননীয় বিচারকগণও পড়েন।এ দুই কালো গাউনের মধ্যে পার্থক্যটি কি এটা একটু খুঁজে দেখুন।
Leave a Reply