বরিশাল ব্যুরো : জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতে ভূয়া সইমোহরী দাখিলের অভিযোগে মো : খলিলুর রহমান আকন্দ ও মজিবর রহমান আকন্দ নামের দুই সহোধরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলের বরিশাল যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শিবলী নোমান খান। মামলা দায়েরর পর অভিযুক্ত দুই আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন বরিশাল চীফ মেট্রপলিটস্ট্রট ম্যাজিস্আেদালতের বিচারক মো : আল ফয়সাল। একজন বিচারক নিজে উদ্যোগী হয়ে অপরাধীর বিরুদ্ধে মামলা করার ঘটনায় আদালতপাড়ায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে। বিচারকের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন একাধিক আইনজীবী ও বিচারপ্রর্থীসহ অনেকেই।
আদালত সূত্র জানায়, বাকেরগঞ্জ থানার পোড়াচিনি গ্রামের মৃত জয়নাল আবেদীনের দুই পূত্র মো : খলিল আকন্দ ও মো : মজিবর আকন্দ বিগত ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারী বরিশাল যুগ্ম জেলা জজ ৩য় আদালতে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন যার নম্বর ০২/২২। উক্ত মামলায় উল্লেখিত দুই সহোধর দাবী করেন তার পিতা জয়নাল আবেদীন ১৯৬১ সালের ২০ আগস্ট মি : এইচ . সি. জেডি সিলভা ও মেরী এস, ইউ সিলভার নিটক থেকে ৫ নং পোড়াচিনি মোৗজার ৫১ নং ক্ষতিয়ানের বিভিন্ন দাগের ২.৭১ একর জমি ক্রয় করেন। ক্রয়কৃত উক্ত সম্পত্তি জয়নাল আবেদীন বিগত ২০০২ সালের ১০ অক্টোবর তার দুই পূত্র মো : খলিল আকন্দ ও মো : মজিবর আকন্দকে মৌখিক দান করে তা দুই পূত্রকে বুঝাইয়া দেন। তবে নিজেদের মধ্যে যোগ সাজসে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে মৌখিক দানকে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিগত ২৫-০৯-২০২১ ইং তারিখে জয়নাল আবেদীন অপর পূত্র ও কন্যাদ্বয় দুই ভ্রাতা মো : খলিল আকন্দ ও মো : মজিবর আকন্দর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এর পরবর্তিতে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর বাদী-বিবাদীগন তাদের কৌশলীর মাধ্য আপোশ মিমাংসার জন্য একটি ছোলেনামা দাখিল করেন। কিন্তু বাদী বিবাদীর দাখিল করা ছোলেনামার কাগজ পত্র পর্যালোচনা করে আদালত ১৯৬১ সালের ২০ অক্টোবরের ৯৩২৬ নং দলিলের সই মোহরী নকল দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু বাদী পক্ষ দলিলের সই মোহরী নকল দাখিল না করে বরিশাল সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একখানা তল্লাস বা পরিদর্শন স্লিপ দাখিল করেন। সেখানে জনৈক সার্চার মো : নাছির উদ্দীন তাহার এখতিয়ার বর্হিভূত একখানা প্রতিবেদন দাখিল করে বলেন, ১৯৬১ সালের ৯৪ নং ভলিউম বিনষ্ঠ হওয়ায় উল্লেখিত দলিলের সই মহোরী দাখিল করা সম্ভব নয়। তবে এখতিয়ার বর্হিভূত প্রতিবেদন দাখিলের কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলে জনৈক সার্চার মো : নাছির উদ্দীন ভবিষ্যতে এহেন কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকবেন বলে আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে অব্যাহতি পান। অতপর রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ১৯৬১ সালের ৯৩২৬ নং দলিলের ৯৪ নং ভলিউম তলব করা হলে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে উপস্থাপনকৃত ৯৪ নং ভলিউমটি ছেড়া ও অপাঠ্য বলিয়া প্রতিয়মান হয়। কিন্তু ভলিউমটির মুড়িতে ৯৩২৬ নং দলিলটির নিবন্ধন দেখা যায় যার তারিখ ৩০-১০ ১৯৬১ ইং। কিন্তু বাদী পক্ষের দাখিল করা ৯৩২৬ নং দলিলের নিবন্ধনের তারিখ ছিলো ২০-০৮-৬১ ইং। পরে উক্ত দলিলের ইনডেক্স ও সই মোহরী নকলের রেজিস্ট্রি তলব করা হলে রেকর্ড কিপার বিধান চন্দ্র সুতার ১৯৬১ সালের ইনডেক্স আদালতে উপস্থাপন করেন যেখানে বাদীর দাখিলকৃত দলিলের নকল সই মহরটি অস্তিত্বহীন। মিথ্যা তথ্য ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আদালতে ভূয়া সইমোহরী দাখিলের বিষয়টি প্রমানিত হওয়ায় বরিশাল যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শিবলী নোমান খান অভিযুক্ত মো : খলিলুর রহমান আকন্দ ও মজিবর রহমান আকন্দ নামের দুই সহোধরের বিরুদ্ধে বরিশাল চীফ মেট্রপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন । চীফ মেট্রপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো : আল ফয়সাল মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযুক্ত দুই সহোধর মো : খলিলুর রহমান আকন্দ ও মজিবর রহমান আকন্দর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। বরিশাল চীফ মেট্রপলিটস্ট্রট ম্যাজিস্আেদালতের নাজির মো : কামরুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বরিশাল যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সেরেস্তাদার মো : নুরুল বশির মামলা দায়ের ও গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির কথা স্বীকার করেছেন
Leave a Reply